‘শিক্ষক নিবন্ধন’ একটি তামাশার নাম

 ‘শিক্ষক নিবন্ধন’ একটি তামাশার নাম

নূর আহমদ
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক নিয়োগে তো এমন নিয়ম হতে পারতো যে, ছাত্রজীবন শেষে যেসব ছাত্র শিক্ষকতায় আগ্রহী তারা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসমূহে শিক্ষক নিয়োগের জন্য একটি নির্দিষ্ট প্রতিষ্ঠানে তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতার সনদ জমা দেবে আর ঐ প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে বা সৃষ্ট পদে প্রয়োজন এবং সময়মতো পর্যায়ক্রমে তাদেরকে তাদের যোগ্যতা অনুযায়ী বিভিন্ন পদে নিয়োগ দেবে।

কিন্তু আমাদের দেশে নিয়মটা কেমন? একজন ছাত্র যতোই মেধাবী হোক, মাধ্যমিক থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি যত কৃতিত্বের সঙ্গেই নিক, কোনো কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ে শুধু নয়, একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষকতার জন্যও তাকে যোগ্য মনে করা হয় না, তাকে এজন্য পুনরায় লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায়  অংশ নিতে হয়! এর একটা অর্থ কিন্তু এটা দাঁড়ায় যে, একজন নিয়োগপ্রার্থী তার শিক্ষাজীবনে যদি সবগুলো পাবলিক পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণিতেও উত্তীর্ণ হয়, সেও কিন্তু প্রাথমিক বিদ্যালয়েও শিক্ষকতার যোগ্য নয়! তার যোগ্যতা যাচাইয়ের আরো বাকি থাকে! আরেকটা অর্থ হতে পারে যে, আমাদের দেশের পাবলিক পরীক্ষাগুলো শিক্ষার্থীদের মেধা বা যোগ্যতা মূল্যায়নে ব্যর্থ; এসব পরীক্ষার সনদগুলো ভুয়া!

আমি বাংলাদেশের স্বনামধন্য দুটি মাদ্রাসা থেকে কামিল পর্যন্ত সবগুলো পরীক্ষায় প্রথম বিভাগ/শ্রেণিতে উত্তীর্ণ হই। ২০০৬ সালে নিবন্ধন পরীক্ষায় প্রভাষক, আরবি পদের জন্য অংশগ্রহণ করি। ফলাফল হাতে পেয়ে মনে আশা জাগলো এবার তাহলে একটা চাকরি পাওয়া সহজ হবে।  কিন্তু আমি কোথাও যোগদানের সুযোগ পাইনি। তাহলে কি আমার পড়ালেখা সব ভুয়া, নাকি শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষায় পাস ভুয়া?

শিক্ষক নিবন্ধন কর্তৃপক্ষকে নিবন্ধন পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে সরাসরি নিয়োগ দেওয়ার ক্ষমতা দিলে সমস্যা কোথায়?

নূর আহমেদ,

দক্ষিণ মাগুরী, দত্তপাড়া, লক্ষ্মীপুর

[লেখাটি দৈনিক ইত্তেফাকে প্রকাশিত হয় ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৪ ইং। লিঙ্ক: https://archive1.ittefaq.com.bd/print-edition/letter/2014/09/23/5339.html ]

No comments:

Post a Comment